bengali sex story - যার যেখানে নিয়তি

বাংলা সেক্স গল্প,Bānlā sēksa galpa,যৌন গল্প,Discover endless Bengali sex story and novels. Browse Bengali sex stories, bengali adult stories ,erotic stories. Visit theadultstories.com
User avatar
rajkumari
Platinum Member
Posts: 1095
Joined: 22 May 2016 09:23

Re: bengali sex story - যার যেখানে নিয়তি-4

Unread post by rajkumari » 16 Feb 2017 10:14

চারটে নাগাদ ফাল্গুণী এল।মনে হচ্ছে খুব ঘুমিয়েছে,চোখ ফোলা ফোলা জিজ্ঞেস করলাম, এত দেরী করলি?
–ঘুমিয়ে পড়েছিলাম রে।তোর বর ফিরেছে?
–এখনো কেউ ফেরেনি।কাল এত কি গল্প করছিলি?
–তোর বরের সঙ্গে?কিছু মনে করিস না বড্ড বকবক করে।কম্পিউটারের খুব গুণগান করছিল।সাইট ইন্টারনেট কত কথা আমি
কি ওসব বুঝি?–মনে হল খুব রোগা।
কম্পিউটারের কথায় মনে পড়ল একটু আগে মন মেসেজ করেছে ফাল্গুণীকে তা বলা যাবে না। কম্পিউটারে মন খুব এক্সপার্ট সবাই বলে।মণিদার চেয়ে মন নামটা বেশ লাগে আমার।অতনু কাল খুব জ্বালিয়েছে ফাল্গুণীকে।একসময় সহপাঠী তার বৌদি হবে অদ্ভুত লাগে। ভালই হবে নতুন করে আলাপ করতে হবে না। একটু স্বার্থপর এই যা, অবশ্য আজকের দিনে স্বার্থপর কেই বা নয়।সবাই নিজের নিজের হিসেব বুঝে নিতে চাইবে।বড়দার সঙ্গে যার বিয়ে হবে সে কি তার মায়ের কথা ভাবছে না?
‘মণিমালা মণিমালা–মা মণিমালা কই?’ মনে হচ্ছে অতনু ফিরেছে,আমি তাড়াতাড়ি উপরে এলাম। অতনু মাকে বলল,মা আমি স্টেটসে যাচ্ছি।
মায়ের চোখে শঙ্কা জিজ্ঞেস করে,তুমি একা?
–না না একা না। অফিসের আরও চারজন যাচ্ছে। আমার দিকে করুণভাবে তাকায় মা।
অতনু বুঝতে পেরে বলল,চিন্তা করছেন কেন?মোটে তো ছ-মাস। একটা ট্রেনিং নিয়ে চলে আসবো।
–কবে যাবে?আমি জিজ্ঞেস করলাম।
–মনে হয় তিন চারদিনের মধ্যেই।কাল অফিসে গেলেই কনফার্ম নিউজ পেয়ে যাবো।
–তার মানে তুমি দাদার বিয়েতে থাকতে পারবে না?
–অসম্ভব। মণিমালা এর উপর আমার কেরিয়ার নির্ভর করছে।আমার কতদিনের স্বপ্ন উফস।
এ্যামেরিকা যাবার সুযোগ পেয়ে খুব খুশি। বলে কিনা কতদিনের স্বপ্ন। ফড়িংযের মত কেমন লাফাচ্ছে দেখো।আমার দিকে নজর পড়তে
বলল,মণিমালা রেডি হয়ে নেও।আমাদের বেরোতে হবে।
-একটু বিশ্রাম করবে না? মা জিজ্ঞেস করে।
–একদম সময় নেই কিছুই গোছগাছ করা হয়নি। কই মণিমালা দেরী কোরনা। মা দাদার বিয়েতে আমি নাক থালেও মণিমালা থাকবে। আসার সময় দাদার জন্য একটা গিফট নিয়ে আসবো।
শাড়ী পরাই ছিল আমি বাবার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। আমাকে দেখে বাবা বললেন,আয় মা,এখন চলে যাবি?
–হ্যা বাবা,দাদার বিয়েতে আবার আসবো।কদিনের মধ্যে ও আবার এ্যামেরিকা যাচ্ছে ছমাসের জন্য।
–ভাল।তুই একটু মানিয়ে চলিস। সবার সঙ্গে মানিয়ে চলা মানে ছোটো হওয়া নয়।কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন,কি জানি কোনো ভুল
করলাম কিনা?
পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বললাম,আসি বাবা।শরীরের যত্ন নিও।
বিষণ্ণমুখে সবাই আমাদের বিদায় দিল।ট্যাক্সিতে উঠতে মোবাইলে টুং করে শব্দ হল। মুচকি হাসলাম,মনের কাজ।পরে দেখবো কি লিখেছে?কাজকাম নেই বসে বসে মেসেজ করছে। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে অতনু আমার দিকে খেয়াল নেই,জামার ভিতর থেকে মোবাইল বের করে ডানহাতে পাশে রেখে মেসেজ খুললাম,কাল শ্রাদ্ধ জানি তুমি পাশে থাকবে।মন।
পাগল নাকি?বাসায় ফিরে আমার কত কাজ দম ফেলার সময় পাবো না,শ্রাদ্ধে পাশে থাকবো?রিপলাই করলে প্রশ্রয় পাবে উত্তর দেবার
দরকার নেই।আচ্ছা মেসেজ পেতে পেতে আমার কি নেশা ধরে যাচ্ছে? অতনু চলে গেলে ছটা মাস একেবারে একা,সঙ্গি বলতে তনিমা।নির্মলাসুন্দরীর কড়া নজর ঘিরে থাকবে সব সময়।
এমনভাব করছে সবাই যেন ছেলে রাজ্য জয় করে এসেছে। শাশুড়ী একের পর এক ফোন করছেন চেনা জানা আত্মীয় স্বজন যে যেখানে
আছে।হ্যা হ্যা অফিস থেকে পাঠাচ্ছে আমাদের কোনো খরচ নেই।যোগ্যতা না থাকলে পাঠাবে কেন? তারপর নাকি সুরে বলেন,খুব খারাপ লাগছে মাকে ছেড়ে কোনোদিন একরাত বাইরে থাকেনি ইত্যাদি।পাশের ঘর থেকে শুনতে পাচ্ছি সব।মক্কেল ওখানে সেটে বসে আছে। মোবাইল খুলে লিখলাম,মন আমি কি অশরীরি পেত্নী যে সবার চোখ এড়িয়ে পাশে থাকবো?দিলাম পাঠিয়ে,ভালই হয়েছে দেখাচ্ছে নট ডেলিভারড।বোতাম টিপে ডিলিট করে দিলাম।
খাওয়া দাওয়ার পর অনেক রাতে ঘুমোতে এল অতনু।পাশে শুয়ে জিজ্ঞেস করে,মণিমালা ঘুমিয়ে পড়েছো?
এতরাতে আবার চুদবে নাকি?সাড়া দেবো কিনা ভাবছি। পা বেয়ে হাত ধীরে ধীরে উপরে উঠছে বুঝতে পারলাম মতলব ভাল নয়,বাথরুম
যাবার অছিলায় উঠে বসলাম।বাথরুম করে ফিরে দেখলাম মক্কেল উঠে বসেছে। আজ না চুদে ছাড়বে না মনে হচ্ছে।খাটে এসে বসতে
অতনু বলল,তোমার মন খুব খারাপ তাই না? অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক। মোটে তো ছটা মাস দেখবে দেখতে দেখতে কেটে যাবে।
একেবারে চুপ করে থাকা ভাল দেখায় না বললাম,গিয়ে রোজ আমাকে ফোন করবে কিন্তু।
–মাকে করবো তোমাকে করবো।তোমায় না করে পারি?
অতনু আমার দিকে এগিয়ে আসে আমি প্রমাদ গনি মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল,লুঙ্গির মধ্যে ওর ল্যাওড়া খপ করে চেপে ধরলাম।
–এ্যাই কি করছো?
–তোমার এইটা খুব সুন্দর। বলেই হাত দিয়ে খেচা শুরু করে দিলাম।
তলপেট উচু করে অতনু বলে,কি করছো কি করছো মাল বেরিয়ে যাবে।
–দেখি কতটা বের হয়?
–বিছানায় পড়বে বিছানায় পড়বে–।
আমি বা হাতে ওর লুঙ্গি বাড়ার নীচে পেতে দিলাম,একবার ফিচিক করে বেরিয়ে তারপর ফোটা ফোটা পড়তে লাগল।লুঙ্গি দিয়ে বাড়া
মুছে দিয়ে বললাম,এবার শুয়ে পড়ো।
লুঙ্গি মেঝেতে ফেলে দিয়ে শুয়ে পড়লাম।
সকালে অতনু অফিস বেরিয়ে গেল।কলিং বেল বাজতে দরজা খুলতে যাবো দেখলাম শাশুড়ী বলল,তুমি যাও আমি খুলছি। আচরণ অদ্ভুত
লাগল,আমি আড়াল থেকে দেখতে থাকি।শাশুড়ী এদিক-ওদিক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে কাগজে মোড়া কি নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
লোকটা কে জানার জন্য আমি বারান্দায় গিয়ে ঝুকে দেখে চিনতে পারলাম এই লোকটা আমাদের খবরের কাগজ দেয়।এত গোপনীয়তার কি আছে? কাগজ সকালে দিয়ে গেছে তাহলে এখন কি দিল?তনিমা হলে না হয় অবাক হতাম না কিন্তু এই বয়সে এত লুকোছাপার কি
দরকার? মা বলছিল ‘গোয়ন্দা গোয়েন্দা ভাব।’
কথাটা মনে পড়তে হাসি পেল।আমার ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম। দুপুরে আমি ঘুমোতাম না এ বাড়ী এসে কোন কাজ নেই কি করবো?একটু ঝিমুনি এসেছে শাশুড়ীর গলা পেলাম বাথরুম থেকে বলছেন,বউমা দেখো তো কে ফোন করল?
আমি শাশুড়ীর ঘরে গিয়ে ফোন ধরি,হ্যালো?…নিমু শোন এবারের সংখ্যায় কামদেবের …হ্যালো কে বলছেন?..আমি পদ্মা,
নির্মলা নেই?..এক মিনিট ধরুন,ফোন রেখে বাথরুমের কাছে গিয়ে বললাম,মা পদ্মা ফোন করেছেন কি বলবো?
–আমার ফ্রেণ্ড। আমার সারা গায়ে সাবান মাখা তুমি বলো আধ ঘণ্টা পর আমি ফোন করছি।
আমি ফোন তুলে বললাম,হ্যালো উনি আপনাকে আধ ঘণ্টা পর ফোন করবেন।
ফোন রেখে নজরে পড়ল বালিশের নীচে কাগজে মোড়া কি যেন? সেইটা নয়তো? দরজার দিকে তাকিয়ে মোড়কটা টেনে বের করে
খুলতে বুক কেঁপে উঠল।অর্পিতার কাছে এই রকম বই দেখেছিলাম।দুই-এক লাইন পড়তে সারা শরীর শিরশির করে উঠল।দ্রুত কাগজে মুড়ে বইটা যথাস্থানে রেখে দিয়ে ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম।এখনো বুক কাঁপছে। একজন বয়স্কা মহিলার এই আচরণ আমাকে
বিস্মিত করে। নির্মলা সুন্দরী এই বয়সে এই সব বইতে কি আনন্দ পাও? তোমার ছেলে মেয়েরা যদি জানতে পারে তাহলে কি হবে ভেবে
দেখছো?এই বয়সে ভগবানের নাম করো তাতে শান্তি পাবে। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম যখন ঘুম ভাঙ্গল দিনের আলো নিভে গেছে। বাড়ী ভর্তি লোক সবাইকে চিনি না।অনিতাদি আমার বড় ননদ এসেছে,অতনুর ফ্লাইট কাল সন্ধ্যে বেলা।দুটো টাটা সুমো ভাড়া করা হয়েছে এয়ারপোর্ট
যাবে সবাই মিলে অতনুকে বিদায় দেবার জন্য। ছমাসের জন্য যাচ্ছে তার জন্য এই আয়োজন খুব হাস্যকর লাগে।বউ হিসেবে যেতে হবে
আমাকেও। একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে বাড়ী ভর্তি লোকজনের জন্য অতনু চুদতে পারে নি।
সকালবেলা তনিমা একজন মহিলাকে নিয়ে এসে আলাপ করিয়ে দিল পদ্মমাসী। ভদ্রমহিলার বয়স পঞ্চাশের উর্ধে স্থুল বপু মাথায় একরাশ কালো চুল। বুঝতে অসুবিধে হয় না রঙ করেছেন।এই তাহলে নির্মলা সুন্দরীর ফ্রেণ্ড? ভদ্রমহিলা আমাকে একনজর দেখে বললেন,বাঃ
বিয়ের দিন বুঝতে পারিনি নিমুর বউমা বেশ সুন্দরী।তারপর তনিমাকে জিজ্ঞেস করেন,তোর মা কোথায়? অনিমা আসেনি?
তনিমা হেসে বলল,সবাই এসেছে ও ঘরে চলো,আসি বৌদি।
সন্ধ্যেবেলা ফ্লাইট শুনেছি,এরা দুপুরেই যাত্রা করবে। স্বামী চলে যাবে শুনলে যেমন বিরহের বাষ্প জমে বিশ্বাস করুণ আমার তেমন কিছু হচ্ছে না।আমি স্নান করতে ঢুকলাম।তার আগে একবার মেসেজ বক্স খুলে দেখলাম,নতুন কোনো মেসেজ নেই।কোনো মেসেজ আসার কথা তা নয় দেখলাম কিছু এসেছে কিনা? বাথরুম গন্ধে ভুরভুর করছে।খুব সাবান লাগিয়েছে সবাই।স্নান করে বেরিয়ে দেখলাম অতনু সাহেবী পোষাকে তৈরী।ভাগ্যিস মাথায় হ্যাট পরেনি?সত্যি কথা বলতে কি আমার ক্যাজুয়াল পোষাক বেশি পছন্দ। পোষাক নয় পোষাকের ভিতর মানুষটাই আকর্ষনীয় হলেই ভাল লাগে।
এয়ারপোর্টে পৌছে দেখলাম প্রায় সবাই সাধারণ বেশ ভুষায় কেউ কেউ আবার হাফ প্যাণ্ট পরে এসেছে।হাফ প্যাণ্টের ভিতর থেকে লম্বা লম্বা
ঠ্যাং বেরিয়ে থাকা কেমন যেন লাগে।অতনু ভিতরে ঢুকে গেছে কাচের ভিতর দিয়ে দেখতে পাচ্ছি।অনর্থক অপেক্ষা করার মানে হয় না,
বাড়ী চলে যেতে পারি। এক নিরালা জায়গা আশ্রয় করে দাঁড়িয়ে আছি।নির্মলা সুন্দরী আর তার ফ্রেণ্ড কখন আমার পিছনে এসে দাড়িয়েছে
খেয়াল করিনি।”আজকালকার মেয়ে কেউ ছিল না বলিস না।” কথাটা কানে যেতে আড়চোখে দেখলাম বক্তা পদ্মরাণী আর শ্রোতা নির্মলা
সুন্দরী।আমার শাশুড়ি বললেন,থাকলেও এখন আর নেই বলে মনে হয়।চুপচাপ ঠাণ্ডা প্রকৃতি। হাসি পেল ঠাণ্ডা প্রকৃতি? আমাকে নিয়েই কথা হচ্ছে।মনে মনে বলি ভুল ধারণা, সবার থাকে না এখনো নেই।আপনাদের মত ঐসব নোংরা বইও পড়ে না।কোথা থেকে তনিমা ছুটতে ছুটতে এসে বলল,বৌদি তুমি এখানে? চলো দাদা তোমায় খুজছে।
আমি তনিমার সঙ্গে এগিয়ে যাই।দূর থেকে হাত নাড়ছে অতনু। আমিও হাত নাড়লাম।ইশারায় কি যেন বলছে তনিমা বলল,তোমাকে চিন্তা
করতে মানা করছে।তনিমা ইশারাও বুঝে গেল? শাশুড়ী এসে বললেন,পদ্ম তোমার খুব প্রশংসা করছিল।
আমি হাসলাম,মনে মনে বলি আমি শুনেছি আমার খুব গুণগান করছিলেন।অন্ধকার হয়ে এল অতনু কোথায় এখন আকাশে না মাটিতে
দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে প্লেনের জন্য জানি না,একে একে গাড়ীতে উঠে বসলাম।মোবাইলে টুং করে শব্দ হল,আমি হাসলাম।আবার টুং। মনে মনে ভাবছি একটা না হয় মন আরেকটা আবার কে?
পদ্মরাণী আমার পাশে বসে জিজ্ঞেস করলেন,তোমার খুব ফোন আসে?
–খুব না,তবে আসে।
–বন্ধু বান্ধব?
–অতনু করে,মা করে।বন্ধুান্ধব খুব রেয়ার।আপনার খুব বই পড়ার নেশা তাই না? আমি জিজ্ঞেস করি।
ভদ্রমহিলা থতমত খেয়ে গেলেন সামলে নিয়ে বললেন,ছোট বেলা খুব পড়তাম। এখন আর তেমন সময় পাই কোথায়?
ভিতরে ভিতরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি কখন এই ভীড় থেকে মুক্তি পাবো? কি লিখেছে মন?মানা করলেও শুনবে না। মন তুমি ভীষণ দুষ্টু।তোমার কি ইচ্ছে নয় আমি সুখে সংসার করি?আমার ঘর ভেঙ্গে তোমার কি লাভ বলো?
–মন খারাপ কোরো না ছ-টা মাস দেখতে দেখতে কেটে যাবে। পদ্মরাণীর গলায় সহানুভুতি।
আমার সময় কাটতে চায় না কখন বাড়ী পৌছাবো। গাড়ী দাঁড়িয়ে পড়ল সিগন্যালে। ইচ্ছে করছে হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশটাকে নেমে
এক থাপ্পড় কষাই। কত গাড়ী চলে গেল আমাদেরটাকেই আটকাতে হবে?
যাক অবশেষে বাড়ী পৌছানো গেল।অনিমাদি মাঝ পথে নেমে গেছেন,বাসে বাড়ী চলে যাবেন।তনিমা আমার সঙ্গে রয়েছে মেসেজ খুলতে
পারছি না। পদ্মরাণি আমাদের সঙ্গে এলেন,ভেবেছিলাম অণিমাদির মত নেমে যাবেন। সন্ধ্যাহার এখানে সারার মতলব।পরে ভুল ভাঙ্গল।
শ্বশুর মশায় ডাকলেন,তনিমা দেখতো আবার কে এল? তনিমা চলে যেতে মেসেজ খুলতে যাবো তনিমা বলল,বৌদি দেখ কে এসেছেন?
উকি দিয়ে দেখলাম বড়দা শ্বশুর মাশায়ের ঘরে ঢুকছে। এখন বড়দা কেন?তাহলে কি নেমন্তন্ন করতে এসেছে?আমি বসার ঘরে যেতে শ্বশুর মশায় বললেন,বৌমা তোমার শাশুড়ী মাকে ডাকোতো,বল তোমার দাদা এসেছে।আমি শাশুড়ীকে ডাকতে গিয়ে হোচট খেলাম।ইস একী কাণ্ড?
শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে পদ্মরাণী চুমু খাচ্ছে।আমাকে দেখে নির্মলা সুন্দরী ধমক দিলেন,এখানে কি চাও?
–আপনাকে ডাকছেন।আমি চোখ নামিয়ে বললাম।
–ঠিক আছে যাচ্ছি দু-বন্ধুতে শান্তিতে একটু কথা বলতে পারবো না?
আমার অনুমান ঠিক বড়দা একটা কার্ড বের করে শ্বশুরমশায়ের দিকে এগিয়ে দিল।শ্বশুর মশায় কার্ডে চোখ বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
মেয়ে কিছু করে?
–আজ্ঞে আমার সঙ্গে ব্যাঙ্কে আছে।বড়দা বলল।
–ব্যাঙ্কে?ব্যাঙ্কে তো ভালই ইনকাম।বেয়াই মশায়ের শরীর কেমন আছে?
বড়দা হতাশ গলায় বলে,ঐ আগের মত।ডাক্তার তো কম দেখালাম না,জলের মত খরচা করছি কিন্তু কোনো উন্নতি দেখছি না।
মন খারাপ হয়ে গেল।বাবার শরীর ভাল নেই।টাকা খরচের কথা এখানে বলার কোনো দরকার ছিল? শাশুড়ী মা ঢুকে বড়দাকে দেখে বললেন,ও তপেন,তা কি মনে করে?
–আসবো আসবো করে সময় করে উঠতে পারছি না,পরশু দিন আপনারা যাবেন।
শাশুড়ী বুঝতে পারেন না শ্বশুর মশায় মুচকি হেসে বললেন,তপেন লজ্জা পাচ্ছে,পরশুদিন ওর বিয়ে।
–আজ অতনু চলে গেল।মনটা খুব খারাপ বাবা।আমার শরীর ভাল না কেউ না যাক বউমা যাবে।
–মা অনেক করে বলে দিয়েছে আপনাকে যেতে।অনিমা বৌদির সঙ্গেও দেখা হবে।
–অনিমা তো এয়ারপোর্টে গেছিল,আজই চলে গেল। অবশ্য অফিস ছিল বলে জামাই আসতে পারেনি।
–এখন আসি,বড়দা উঠে দাড়াল।আমাকে দেখে বলল,সকাল সকাল যাস মণি।
মনে মনে বলি আমি যাবো শুধু বাবাকে দেখতে।এককাপ চা-ও বড়দাকে দেওয়া হল না।একী অসভ্যতা? মানুষের ভালমন্দ বিচার হবে কোন নিরিখে? খুব খারাপ লাগল,ছেলের জন্য মন খারাপ তাই এসেই চুমাচুমি শুরু করেছিলে? ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে চেঞ্জ করছি। নির্মলা সুন্দরী বাইরে থেকে বললেন,দরজা বন্ধ করে কি করছো?
দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলাম,দরজা খুলে চেঞ্জ করবো?
নির্মলাসুন্দরী অবাক হয়ে আমাকে দেখেন। হয়তো মনে মনে ভাবছেন কাকে ‘ শান্ত প্রকৃতি’ বলেছিলেন? বললেন,আচ্ছা তোমার আক্কেলটা কি?আমি না হয় একটা কাজে ব্যস্ত আছি তপেন এসে চলে গেল এককাপ চাও দিতে পারো নি?তুমি কি ভেবেছো এভাবে
শ্বশুরবাড়ির বদনাম করবে?
যা কাজে ব্যস্ত দেখলাম আজ, বদনাম করার জন্য আমাকে কিছু করতে হবে না।পদ্মরাণি বেরিয়ে এসে বললেন,আঃ নিমু তুই কাকে
কি বলছিস?ওর মনের অবস্থাটা বোঝ।
–কি বুঝবো,গেছে তো ছ-মাসের জন্য এমনভাব করছে যেন আর দেখা হবে না।পেম উথলে পড়ছে। শাশুড়ী দপদপিয়ে চলে গেলেন।
মোবাইলের কথা মনে পড়ে গেল।ঘরে ঢুকে মেসেজ বক্স খুললাম,শ্রাদ্ধ মিটে গেল।সারাক্ষণ অনুভব করেছি তোমার উপস্থিতি।মন।
হ্যা তাইতো বলেছিল আজ শ্রাদ্ধের কথা। পাগল যা মনে আসে লেখে কোনো অর্থ হয় না।ও আর একটা আছে,পরেরটা খুললাম,পেত্নী
এ-কার বাদ দিলে কি হয়?মন।
ডিলিট করে দেওয়া মেসেজটা তাহলে পেয়েছে? এ-কার কাটলে হয় পত্নী।অসভ্য কোথাকার,দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় ভর্তি।এসব যদি অন্যের হাতে পড়ে?তবু ডিলিট করতে ইচ্ছে হল না। বিয়ের দিন তো যাচ্ছি যদি পথে দেখা হয়ে যায় বলে দিতে হবে কি লাভ পাগলামী করে,
চাকরি পেয়েছো এবার বিয়ে থা করে ঘর সংসার করো।পুরানো স্মৃতি ভুলে যাও।সেদিনের জন্য মনকে দোষ দেওয়া যায় না। অনেক
নিষেধ করেছিল,কি পাগলামীর ভুত চেপেছিল আমার মাথায় তার পরিণাম অমন হবে ভাবিনি। পদ্মরাণী ঢুকলেন ঘরে,এখনো যায়নি? হেসে বললেন,আসি বউমা? বেশি চিন্তা কোর না।বলে খাটের একপাশে বসলেন।আসি বলে বসে পড়ল যে কি মতলব পদ্মরাণী?
–তুমি আমাকে চেনো না,আমি আর নিমু সেই ছোটবেলার বন্ধু পশুপতি জানে।
পশুপতি আমার শ্বশুর মশায়ের নাম। বন্ধুত্বের নমুনা একটু আগে দেখেছি। আমাকে এসব কথা শোনানো কেন?বিধবা না সধবা সাজগোজ
দেখে বোঝার উপায় নেই।হাতে শাখা পলা দেখছি না।পদ্মরাণী বললেন,ওর চলে যাবার পর খুব একা মনে হত।দুই বন্ধু দেখা হলে আর ইচ্ছে করে না ছেড়ে যেতে। তুমি কিছু মনে কোরনা আমার মত অবস্থা হলে বুঝবে।যাক আসি।
পদ্মরাণী চলে গেলেন। উনি কি যা দেখেছি সেই ব্যাপারে কিছু বললেন?দেখে কেমন মায়া হয়।সম্ভবত খুব ঘাবড়ে গেছেন।শরীরের জ্বালা
মানুষের আত্মবিস্মৃতি ঘটায় পরে মনস্তাপ করে।
নির্মলা সুন্দরীর গলা পেলাম,আমি আর এখন খাবার করতে পারবো না রোল-টোল কিছু নিয়ে আয়।
তনিমা এসে বলল,বৌদি আমার সঙ্গে একটূ যাবে?
ঘরে একঘেয়ে লাগছিল চুলে চিরুণী বুলিয়ে তনিমার সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।ফুটপাথে রোলের দোকান,পাঁচটা এগ রোলের ফরমাস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আমি জিজ্ঞেস করি ,পাঁচটা কার কার?
–আমরা দুজুন আর বাবা মা পদ্মমাসী।তনিমা বলল।
–উনি যাননি?
–পাগল এখনই যাবেন।সারাক্ষণ মার সঙ্গে কিযে ফুস ফুস করে কে জানে।
না জানাই ভাল সে সব মনে মনে ভাবি।তনিমা যেন কেমন অস্বস্তি বোধ করছে মনে হল। একটি ছেলে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে রোলের ফরমাস দিল।
–তাড়াতাড়ি দেবে না আমরা চলে যাবো?তনিমা তাগাদা দিল।
মনে হচ্ছে সদ্য আসা ছেলেটা তনিমার অস্বস্তির কারণ।ছেলেটির দিক থেকে সরে তনিমা আমার গা ঘেষে দাড়াল।ছেলেটি বলল,তনু তোমার দাদা আজ এ্যামেরিকা গেল?
–তুমি আমাকে তনু বলবে না,আমার নাম তনিমা।ফুসে উঠল তনিমা।
–তুমি আমার উপর খচে যাচ্ছো কেন বলতো? আমি কি এমন খারাপ কথা বললাম?
–আমাদের দেখে তোমার রোল খাবার ইচ্ছে হল? নিজেকে খুব চালাক ভাবো?
–আচ্ছা ঠিক আছে,এই আমাকে দিও না,আমি পরে আসছি। ছেলেটি চলে গেল। তনিমা তাকিয়ে থাকে ছেলেটির চলে যাওয়ার দিকে।ইতিমধ্যে একটা ক্যারিব্যাগে রোল ভরে আমাদের এগিয়ে দিল,তনিমা পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বলল,চলো বৌদি।
–ছেলেটা কে,তোমার চেনা মনে হল?আমি জিজ্ঞেস করলাম।
–ওর নাম সজল পাড়ার ছেলে। আমার সঙ্গে লাইন করতে চায়।
–তোমার মাকে এসব বলোনি কেন?
–না বৌদি তুমি মাকে এসব বোলো না। মাকে তো চেনো না তাহলে মা ওকে ডেকে যা না তাই বলে অপমান করবে।
আমি আর কথা বাড়ালাম না,তনিমা বলল,আমরা তো পরশু যাচ্ছি?হেভবি মজা হবে এক সঙ্গে দু-দুটো বউ আসবে বাড়ীতে তাই না?
তোমার বড়দার সঙ্গে যার বিয়ে হবে বড়দি তাকে চেনে।
–কে অণিমাদি?কখন বলল তোমায়?
–কাল তো মার সঙ্গে এইসব গল্প হচ্ছিল।পদ্মমাসী কি অসভ্য, জানো কি বলছিল?
–কি বলছিল?
–দুই ‘ম’ একসঙ্গে,হি-হি-হি মেয়ে আবার মাল মানে টাকা পয়সা।
সকাল সকাল সাজগোজ করে তৈরী হয়ে নিলাম।ঠিক ছিল আমার সঙ্গে তনিমা যাবে শেষ মুহুর্তে নির্মলা সুন্দরী বললেন,শোনো বউমা
তুমি তো আজ রাতে ফিরবে না তনিমা রাতে বাইরে থাকতে পারবে না। তুমি বরং একাই যাও।তনিমার মুখ ভার হল সকাল থেকে কত আশা করছিল বিয়ে বাড়ী যাবে। বিয়ে বাড়ী সবাই ব্যস্ত থাকবে ভাল করে কথা বলা যাবে না।বরং বউভাতের সময় গিয়ে কটাদিন থেকে আসা যাবে। আমি বললাম,ঠিক আছে আমিও রাতে ফিরে আসবো।তনিমা আমার সঙ্গে যাক।
–দেখো বউমা আমি কিন্তু রাগ করে বলছি না,তুমি কটাদিন থেকে আসতে পারো।
আমি হেসে বললাম,আমিও রাগ করে বলছি না,আজ রাতেই ফিরে আসবো। কটাদিন থাকা বউভাতের সময় ভাবা যাবে।
শালোয়ার কামিজ পরেছে তনিমা,রাস্তায় নেমে তনিমা আমার কনুই চেপে ইশারা করতে তাকিয়ে দেখলাম উল্টদিকের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে
সজল।তনিমা বলল,বলতো এরকম হ্যাংলার মত দাঁড়িয়ে থাকলে ভাল লাগে? তুমি যদি না থাকতে কাছে এসে জিজ্ঞেস করতো,কোথায় যাচ্ছ তনু?
বাস স্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে আছি বাসের জন্য।ছেলেটি নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে এদিকে চোখচুখি হলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অন্যদিকে।একটা
মেয়ের মধ্যে কি পায় ছেলেরা,অনেক মেয়ের মধ্যে কেন বেছে নেয় একজনকে?তনিমা যখন পাত্তা দিচ্ছে না আরো তো কত মেয়ে আছে
সময় নষ্ট না করে অন্য কোথাও চেষ্টা করতে পারে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,ওকে তোমার ভাল লাগে না?
–ভাল লাগার কথা হচ্ছে না। জানো বৌদি সজলরা ভাড়া বাড়ীতে থাকে।
বাস এসে গেছে উঠে পড়লাম।লেডিস সিটে দুটো ছেলে বসেছিল উঠে দাড়াতে আমরা বসে পড়ি।কাউকে উঠিয়ে নিজে বসতে ভাল লাগে
না। ওরা যদি না উঠত আমি বলতাম না,লেডিস সিট উঠূন। তনিমার কথা নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। সজলরা ভাড়া থাকে নিজেদের বাড়ী নেই।একটি ছেলে বা একটি মেয়ের পারিপার্শ্বিক যোগ করে তার মান নির্ধারিত হয়।
একটি মেয়ের কোনো ছেলেকে ভাল লাগল যখন জানল তার বাবা ডাক্তার বা আদালতের বিচারক ছেলেটির মান বেড়ে গেল আবার
যদি দেখা যায় তার বাবা সাধারণ কেরাণী বা বাজারে মাছ বিক্রি করে তখন মেয়েটির চোখে তার মুল্য হ্রাস পেল।যেখানে বিচারের মাপকাঠিতে স্বার্থ জড়িত তাকে কি প্রেমের সম্পর্ক বলা যায়?
তে-রাস্তার মোড়ে বাস থেকে নেমে পড়লাম।কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলাম,চারটে বেজে গেছে। আমাকে দেখে সবাই হৈ-হৈ করে উঠল,
ঐতো মণিমালা এসে গেছে।মা জিজ্ঞেস করল,এত দেরী করলি আমি ভেবেছিলাম সকালে এখানে খাওয়া দাওয়া করবি।এসো তনিমা
উপরে চলো।
বড়দা রেজিষ্ট্রি বিয়ে করেছে,শ্বশুরবাড়ীতে বিধবা মা ছাড়া কেউ নেই সেজন্য আনুষ্ঠানিক ব্যাপারগুলো বাদ দেওয়া হয়ছে। তবে বউভাতের অনুষ্ঠান দুজনেরই হবে।বড়দার ঘরে দেখলাম চুল বেঁধে বসে আছে মৌমিতা বৌদি।বরযাত্রী যাবার জন্য তৈরী।ছোড়দার ঘরে তার বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে।বাবার ঘরে গিয়ে দেখলাম ধোপদুরস্ত ধুতি পাঞ্জাবি পরে বসে আছেন।অন্যদিন শুয়ে থাকেন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি,বাবা তুমি যাবে?
বাবা হাসলেন বললেন,তুই এখন এলি ভেবেছিলাম সকালে আসবি।এই শরীরে আর কোথাও যাওয়া হবে না,বাড়ীতে লোকজন আসছে
তাই ভদ্রস্থ পোষাক পরেছি।
মা ঢূকে বলল,তুই এখানে? ঐ মেয়েটা নীচে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে,পরের মেয়ে খেয়াল রাখিস।
মা তনিমার কথা বলছে। তনিমার বিচারের মাপকাঠি বেশ শক্ত ওকে নিয়ে কোনো ভয় নেই।উপর থেকে উকি মেরে দেখলাম ছোড়দার
বন্ধুদের সঙ্গে গপ্পে মেতেছে।কিছুক্ষণ এদিক-ওদিক ঘুরে মনে পড়ল ফাল্গুণী বলেছিল ‘তুই এখন এ বাড়ীতে অতিথি।’ সেকথা এখন অনুভব করছি,কারো নজর নেই আমার দিকে।যে আসছে সবাই খোজ করছে বড় বৌদির।মা অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত।ভাবলাম মাকে
সাহায্য করি,রান্না ঘরে যেতেই মা এমন করে উঠল যেন অনধিকার প্রবশ করেছি।মা বলল,এই কালিঝুলির মধ্যে তুই কি করতে এলি?যা বিশ্রাম করগে।বিয়ে হয়ে আমি পর হয়ে গেলাম? কাজ করিনা বলে আগে মা কত বকাবকি করত,নিজের সংসার হোক তখন বুঝবে।
ছোড়দাকে নিয়ে বড়দা আর ছোড়দার দুই বন্ধু একটা গাড়ীতে আগে আগে চলে গেল। পুরোহিত মশায়কে ফেলে গেছে বলে তিনি খুব
বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বোঝাতে লাগলেন শুভ কাজে পুরোহিতের ভুমিকা কতখানি গুরুত্ব পুর্ণ এসব উপেক্ষা করার জন্য যত অনাসৃষ্টি
কাণ্ড ঘটছে।আমার বিয়ের সময় কনে বউ হয়ে শেখানো মন্ত্র বলছিলাম তখন পুরোহিত মশায়কে যথযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়ছিল কি না
জানা নেই।কিছু অনাসৃষ্টি কি ঘটেছে? শোরগোল পড়ে গেল বাস এসেছে।এবার পুরোহিত মশায় আগেভাগে গিয়ে জানলার ধারে বসলেন। তনিমা কোথায় বাসে উঠে দেখলাম ছোড়দার বন্ধুদের সঙ্গে মধ্যমণি হয়ে বসে আছে।ওর কোনো অসুবিধে হচ্ছ কিনা কিসে সুবিধে হয় তা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। তনিমাও জারিয়ে জারিয়ে তাদের সেবা উপভোগ করছে। ডাকতে গিয়েও ডাকলাম না,আনন্দ করতে এসেছে আনন্দ করুক।ছল ছুতোয় কেউ কেউ গায়ে হাত দিচ্ছে,দেবেই সেবা কেন কোনো কিছুই বিনা মাগনায় পাওয়া যায় না। ফাল্গুণীদের বাড়ি বেশিদুর নয়,পৌছাতে বেশিক্ষণ লাগল না।
বাস থেকে নেমে মজা করে তনিমাকে বললাম,কে ভাড়াটে কে বাড়ীওলা তোমার কিছু জানা নেই।
তনিমা হেসে বলল,ধ্যেত তুমি না…আমি কি প্রেম করতে এসেছি নাকি?
খুজে খুজে বের করলাম ফাল্গুণী কোথায়।নাকে নথ পরিয়েছে বেশ লাগছে দেখতে।পাশে দাঁড়িয়ে একভদ্রমহিলা ফাল্গুণীর হাত থেকে
উপহারগূলো নিয়ে গুছিয়ে রাখছে।আমি ওর পাশে দাড়ালাম। এক ভদ্রমহিলা হাসতে হাসতে এসে একটা শাড়ী ফাল্গুণীর হাতে দিলেন।
আমি সাহায্য করার জন্য হাত বাড়াতে শাড়ীটা সরিয়ে নিয়ে এমনভাবে তাকালো আমার দিকে আমি হাত সরিয়ে নিলাম। আমরা এক
কলেজে পড়তাম পরস্পর বন্ধু ছিলাম একী সেই ফাল্গুণী?চোখের জল সামলে ধীরে ধীরে সেখান থেকে সরে এলাম। মনে পড়ল আমাদের বাড়ী ফিরতে হবে বেশি রাত করা যাবে না।এদিক-ওদিক খুজে বের করলাম তনিমাকে।বিরক্ত হয়ে তনিমা বলল,এখনই?
–বেশি রাত হলে বাস পাওয়া যাবে না।
অনিচ্ছে সত্বেও তনিমা আমার সঙ্গে খেতে বসল। আমি একমাত্র বোন নিজের দাদার বিয়েতে এসেছি বলে মনে হল না। কেমন অনাহুত
যেন খাবার জন্য এসেছি। তনিমার কোনো হেলদোল নেই,ওকে খাওয়াবার জন্য কয়েকটি ছেলে খুব ব্যস্ত।
একজন বলল,এত তাড়াতাড়ি বসে পড়লেন?
–বাড়ী ফিরতে হবে। তনিমা আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলল।
–আপনার মোবাইল ফোন নেই?
–এবার ভাবছি কিনতে হবে।তনিমাটা হাদা নয় বুঝতে পারলাম।
খাওয়ার পর দেখলাম একটি ছেলে খামে মোড়া পান তনিমার হাতে দিয়ে ফিস ফিস করে বলল, মোবাইল নম্বর লেখা আছে।
তনিমা পান বের করে খামটা বুকে ঢুকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। আমরা সিড়ি দিয়ে নীচে নামতে থাকি। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করছে না,কিরে চলে যাছিস থাকবি না? অভিমাণ হল।রাস্তায় কয়েকটা গাড়ী দাঁড়িয়ে কয়েকজন লোক। চমকে উঠলাম,মন না?অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পরনে জিন্সের প্যাণ্ট ছাপা টি-শারট।মুখে কোনো কথা নেই জিজ্ঞেস করি,তুমি এখানে?
নিরুত্তর মন।হেসে বুলাম,ভুত দেখলে নাকি?
–উম হু,সম্বিত ফেরে বলে,ভুত না পেত্নী।কোথায় যাচ্ছো?
–বাড়ি যেতে হবে না?
একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ীর দরজা খুলে বলল,ওঠো।
উঠবো কি উঠবো না স্থির করার আগেই তনিমা উঠে বসে ডাকল,এসো বৌদি।
মন তুমি খুব চালাক আমি উঠলেই তুমি আমার পাশে বসবে।আমি উঠে দরজা ঘেষে বসলাম যাতে পাশে বসতে না পারে। মন বলল,একটু ভিতরে ঢুকে বোসো।
–কেন?
–দরজা বন্ধ করলে তোমার লাগবে।
আমি সরে বসতেই ধুম করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ড্রাইভারকে বলল, মেমেসাবকে বাড়ী পৌছে দিয়ে আসুন।
আমি জানলা দিয়ে হাত বের করে বললাম,বাই।
মন এগিয়ে এসে হাত চেপে ধরে হাতের তালুতে চকাম করে চুমু খেল।পাশে তাকিয়ে দেখলাম অন্য জানলা দিয়ে হাত বের করে তনিমা
টাটা করছে।মুখে হাসি মন হাত নাড়ছে।হাত মুখের কাছে নিয়ে যেখানে চুমু দিয়েছে সেখানে ঠোট রাখলাম।অসভ্য কোথাকার,তনিমা দেখলে
কি ভাবতো? পিছনে হেলান দিয়ে বসলাম।একটু আগে বিয়ে বাড়ীর সব অবজ্ঞা গ্লানি এক চুমুতে ধুয়ে মুছে সাফ।
–উনি কে বৌদি?
–ছোড়দার বন্ধু।
–বেশ জলি তাই না?
আমি কোনো উত্তর না দিয়ে চোখ বুজে থাকি।আমার বিয়েতে নেমন্তন্ন করেনি নিজের বিয়েতে বলেছে। মন তখন ছিল বেকার এখন বড় চাকুরে।এটাই কি মানুষের আইডেন্টিটি?
তনিমা জিজ্ঞেস করে,উনি কে?
ড্রাইভার বলল,ম্যানিজার সাহিব।
–আপনাকে ‘আপনি-আপনি’ বলছিলেন?
–উনি সবাইকে বলেন।
–কোথাকার ম্যানেজার?
–টিসিএস।
তনিমাটা এত বকবক করে,ভাল লাগে না। তনিমা বলল,টিসিএস? আপনি অতনু চক্রবর্তিকে চেনেন?
–সবাইকে চিনি,আজই তো দেখা হল।
— না না উনি এখন এ্যামেরিকায় আছেন।
–কত অতনু কাজ করে কজনকে চিনবো বলুন?
তনিমা দমে গেল।গাড়ী ফাকা রাস্তা পেয়ে ছুটে চলেছে কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ীর নীচে এসে বললাম,এখানে থামুন।
উপরে ঊঠতে নির্মলা সুন্দরী বললেন,যাক তোমরা এসেছো?
তনিমা বলল,মা আমাদের গাড়ী পৌছে দিয়ে গেল।নিরমলা সুন্দরী বললেন,তোমার কাছে কেউ শুনতে চেয়েছে। যাও শুয়ে পড়ো।
আজ বউভাত।জানলার ধারে বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ব্যস্ত মানুষের পথ চলা দেখছি। বাড়িতে দু-দুটো বউ সেখানেও ব্যস্ততা কিছুটা অন্য রকম।একদিন যে বাড়ীর সঙ্গে ছিল ওতপ্রোত সস্ম্পর্ক বিয়ের পর সে বাড়ী আজ আর পাঁচটা বাড়ীর মত ধরাছোয়ার বাইরে।ইচ্ছে হলেই যে কোনো ঘরে আমি ঢুকতে পারবো না।সময়মতো চা পাইনি বলে চোটপাট করতে পারবো না। ফাল্গুণী চাকরি করে না মৌমিতা চাকরি
করে কিন্তু একজায়গায় দুজনে এক। ডান হাত উল্টে দেখলাম মন এখানে ঠোট রেখেছিল।মাথায় খালি দুষ্টু বুদ্ধি। কা ল রাতে মেসেজ আসেনি। এভাবে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে মেসেজ আসা।দেখতে দেখতে তিন সপ্তাহ চলে গেল একদিন ফিরে আসবে অতনু।সেই এক ঘেয়ে জীবনযাপন।দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এল।
সকাল থেকে এ বাড়ীতে অশান্তি। পশুপতি শাড়ী কিনে এনেছেন।দুটো শাড়ী একই রকম। নির্মলাসুন্দরী বেকে বসেছেন তিনি যাবেন না,শরীর ভাল নেই।তনিমা হতাশ কত আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল সবার সঙ্গে দেখা হবে আবার।সেই ছেলেটা যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছিল।বৌদি বলছিল ছেলেটার নাম মণিশঙ্কর,দাদা নিশ্চয়ই চিনবে। তাকে ঘুরে ঘুরে দেখছিল। বোউদির সঙ্গে কথা বলার আছিলায়
তার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছে ছিল। ভেবেছিল বৌদি আলাপ করিয়ে দেবে। বৌদির উপরু খুব রাগ হয়।একটা কথা মনে পড়তে হাসি পেল,বৌদি বলল ভুত মণিশঙ্কর ভুল ধরিয়ে দিল মেয়েরা ভুত নয় পেত্নী হয়। ভুত হয় ছেলেরা।সজলকে এখনই বাতিল করার দরকার নেই,বেশি প্রশ্রয় না দিলেই হল।
পশুপতি বউকে বোঝায়,দেখো কুটুম বলে কথা তুমি না গেলে ভাল দেখায় না। বউমার যাওয়া আর তোমার যাওয়া কি এক হল?
–দেখো আমাকে জ্বালাতন কোর নাতো?আমি কি বেড়াতে যাচ্ছি?বিয়ে বাড়ী যেমন তেমন গিয়ে হাজির হলেই হ্ল?বউমা শোনো।
আমি বেরিয়ে সামনে গিয়ে দাড়াতে নির্মলা সুন্দরী বললেন,তুমি বলছিলে না কদিন গিয়ে থাকবে?
–আমি একা যাবো না।
–অতনু নেই কে তোমায় নিয়ে যাবে বাছা?তুমি বলবে শাশুড়ীর শরীর ভাল না–।
–আমার শরীর ভাল না মা।
–তোমার আবার কি হল দিব্যি তো চরে বেড়াচ্ছিলে? তুমি কি আমাকে জব্দ করতে চাও?
–আমার শরীরের সঙ্গে আপনার জব্দ হওয়ার কি হল?
–মুখে মুখে তর্ক করবে না বলে দিচ্ছি।পদ্ম ঠিকই বলেছিল মেনিমুখোরা তলে তলে বেশি শয়তান।
–বাইরের লোকের সঙ্গে বাড়ীর বউকে নিয়ে কথা বলতে লজ্জা করল না?
–ব-উ-মা।পশুপতি গর্জে উঠলেন।তুমি খুব বাড়াবাড়ি করছো তখন থেকে লক্ষ্য করছি।যাও ঘরে যাও,তোমাদের কাউকে যেতে হবে না।
–আমি কি বাড়াবাড়ি করলাম? মা-ই তো বললেন আমাকে নিয়ে ওনার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছেন।
–আমাকে ঘাটিও না বলছি,পরশু রাতে যে পৌছে দিল ছেলেটি কে?
–বাবা ছেলেটা আমাদের সঙ্গে আসেনি।তনিমা বলল।
–তুমি চুপ করো।বড়দের মধ্যে কথা বলতে আসবে না।
আমি আর দাড়ালাম না,এরা খুব নোংরা যত কথা বলবো তত ক্লেদ উঠবে।বন্ধু,কিসের বন্ধু যদি না দেখতাম। তিনকাল গিয়ে এককালে
ঠেকেছে কোথায় রামায়ণ মহাভারত পড়বে তা না লুকিয়ে লুকিয়ে পর্ণোগ্রাফির বই পড়ে।ঘরে এসে বালিশে মুখ গুজে কেঁদে ফেললাম।

User avatar
rajkumari
Platinum Member
Posts: 1095
Joined: 22 May 2016 09:23

Re: bengali sex story - যার যেখানে নিয়তি-5

Unread post by rajkumari » 16 Feb 2017 10:16

বাপের বাড়ী শ্বশুরবাড়ী কোনোটাই আজ নিজের বলে মনে হচ্ছে না।গভীর অন্ধকারে জোনাকির মত মিট মিট করে জ্বলছে একটি মুখ,
অবজ্ঞা অবহেলায় আজও অম্লান। তাতেই আরো বেশি রাগ হয়, একটু মান-অপমান বোধও কি থাকতে নেই?কখন ঘুমিয়ে
পড়েছিলাম,ঘুম ভাঙ্গল সন্ধ্যে বেলা। নির্মলা সুন্দরী বললেন,ভাত ঢাকা আছে খেয়ে নেও।
–আমার ক্ষিধে নেই।
–কি ব্যাপার বলতো?তোমার মতলবটা কি কোন রাগের প্রতিশোধ নিতে চাও বউমা?
–দোহাই আপনার,বিশ্বাস করুন আপনাদের প্রতি আমার কোনো রাগ নেই।আমাকে একটু শান্তিতে থাকতে দিন।
নির্মলা সুন্দরী দমে গেলেন কি ভেবে যাবার আগে বললেন,শোনো বউমা তুমি শান্তিতে থাকো তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই শুধু একটা অনুরোধ নিজে যা করে বেড়াও আমার মেয়েটাকে তার সঙ্গে জড়িও না।
নির্মলাসুন্দরী চলে গেলেন। আমি অবাক হয়ে ভাবি কি সব বলে গেলেন উনি? তনিমাকে কিসের সঙ্গে জড়ালাম আমি? আমার বিয়ের আগে থেকেই সজলের সঙ্গে তনিমার আলাপ।খাটের উপর পড়ে থাকা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ বক্স খুললাম। নতুন কোনো
মেসেজ নেই।রাত বাড়তে থাকে সবাই ব্যস্ত বিয়ে বাড়ীতে,ফাল্গুণী আর মৌমিতাকে সাজিয়ে চেয়ারে বসিয়ে রেখেছে।একে একে এসে তুলে
দিচ্ছে তাদের হাতে উপহার।খুব অভিমাণ হয় কারো কি একবারও মনে হল না বাড়ীর একমাত্র মেয়ে মণিমালা বিয়েতে আসেনি। কেন এলনা গুরুতর কিছু ঘটতেও তো পারে। ফোন করে খবর নেবার প্রয়োজন বোধ করল না কেউ? ছোড়দা বড়দা বউ পেয়ে সব ভুলে গেছে? না,কারো মনে রাখার দরকার নেই আমিও আর কাউকে মনে করতে চাইনে। যা আছে আমার কপালে তাই হবে। উঠে রান্না ঘরে গিয়ে
চা করছি নির্মলা সুন্দরী এসে জিজ্ঞেস করলেন,এত রাতে চা করছো,এ বেলাও কিছু খাবে না নাকি?
–আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না মা।
–ঠিক আছে ইচ্ছে না করলে থাক।খালি চা খেও না সঙ্গে মুড়ি বা বিস্কিট কিছু খেও।
শাশুড়ির সদয় ব্যবহার ভাল লাগে,জিজ্ঞেস করলাম,আপনি চা খাবেন?
–আমি? আচ্ছা দাও।কিছুক্ষণ পর চিন্তিত ভাবে জিজ্ঞেস করেন,আচ্ছা বউমা মেয়েটা এখনো ফিরল না কোথায় যেতে পারে বলতে পারো?
–তনিমা আপনাকে বলে যায় নি?
–আমাকে কি কিছু বলে,সারাক্ষণ মোবাইল কানে কি যে বকবক করে কার সঙ্গে কে জানে। অতনুকে পইপই করে বলেছিলাম ওকে ঐসব দেওয়ার দরকার নেই তা কেউ শোনে আমার কথা?
শাশুড়ীর প্রতি মায়া হয় বললাম,চিন্তা করবেন না এখুনি চলে আসবে।বাস ট্রামের যা অবস্থা।
–চিন্তা করছি না, কি জানো ছেলেদের গায়ে না পড়লেও মেয়েদের গায়ে ছাপ পড়ে যায়।
নির্মলাসুন্দরীকে এককাপ চা দিয়ে একটা বাটিতে মুড়ি আর চা নিয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম।মুড়ি চিবোতে চিবোতে ভাবতে থাকি ছাপ
পড়ে ঠিকই আবার ছাপ তোলার নানা ওষুধ বেরিয়েছে বাজারে। পরক্ষণেই মনে পড়ল সঞ্চিতাদির কথা ,আমার দুসম্পর্কের দিদি।বিয়ের পর গর্ভবতী হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় চেক-আপের জন্য।তখন নাকি ডাক্তারবাবু পরীক্ষা করে জিজ্ঞেস করেছিলেন,আগের সন্তান এ্যাবর্শন করিয়েছিলেন না নষ্ট হয়ে গেছিল?ব্যাস আসল ব্যাপার ফাঁস হতেই পত্রপাঠ বউকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাপের বাড়ি।সঞ্চিতাদি বাপের বাড়ীতে পুত্র সন্তান প্রসব করে।খবর পেয়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকেরা সে যাত্রা ক্ষমা করে দিয়ে সঞ্চিতাদিকে ফিরিয়ে নিয়ে
যায়।
একেই বলে ভাগ্য,ছাপ বাইরে মোছা গেলেও ভিতরে থেকে যায়।আমার ক্ষেত্রে অবশ্য প্রেগন্যান্সি হয়নি তার আগেই রোধ করা হয়েছিল। মুখটা মনে পড়ল, মন তখন পাগল হয়ে গেছিল। মুড়ি চিবোতে বেশ লাগছে।তনিমা কোথায় গেল?সজলের সঙ্গে যায় নি তো?তনিমা আসল কথা জানে না,ওর ধারণা ওকে দেখেই মন এগিয়ে এসেছিল।ব্যাপারটা ভাবতে বেশ মজা লাগে।কত বয়স হবে তনিমার? খুব কম হলেও তিন-চার বছরের ছোট হবে আমার থেকে?
তনিমার গলা পাচ্ছে,মনে হচ্ছে তনিমা ফিরেছে।শাশুড়ী বলছেন,কি হল আবার?এবাড়ীতে দেখছি সবার ক্ষিধেতে অরুচি?
–জানো মা বৌদির বাপের বাড়ী হেভি সাজিয়েছে।
–তুই কি করে জানলি?
–ওদিকে একটা কাজে গেছিলাম দূর থেকে দেখলাম।
–একা একা অতদুর গেছিলি না আর কেউ সঙ্গে ছিল?
–কে আবার সঙ্গে থাকবে?তোমার যত বাজে কথা।বৌদি কি ঘুমিয়ে পড়েছে?
–জানিনা বাপু আজ সারাদিন কিছু খেল না,খানিক আগে চা করে নিয়ে গেল। অল্প একটু খা।
–ঠিক আছে খুব অল্প দেবে।কিছুক্ষণ নীরবতা শাশুড়ি সম্ভবত ভাত আনতে গেলেন।তনিমার গলা পাওয়া গেল,জানো মা দাদার অফিসের
ম্যানেজার বোউদির দাদার বন্ধু।
–আগে তো শুনিনি,তুই এত খবর কোথায় পাস?
–আগে ইনফোসিসে ছিল,ইনফোসিস থেকে মোটা মাইনের অফার দিয়ে ওদের ব্যাঙ্গালোর অফিসের জন্য ডাকছে। কেন যাচ্ছে না জানো হি-হি-হি।
–এর মধ্যে হাসির কি হল?
–ফিঁয়াসেকে ছেড়ে যাবে না হি-হি-হি।
–সে আবার কি?
–লভার,লভার এখানে থাকে তাই ব্যাঙ্গালোর যাবে না।
খেয়েদেয়ে তনিমা দরজা ধাক্কা দিয়ে জিজ্ঞেস করে,বৌদি ঘুমিয়ে পড়েছো?
আমি সাড়া দিলাম না,রাত দুপুরে গপ্প করার মত মেজাজ আমার নেই।তনিমা এত কথা জানলো কি করে? কে ওকে এত খবর দিল? মনের সত্যিই কি কোনো প্রেমিকা আছে? বন্দনাকেও বলেছিল এ কথা।যদি সত্যিই কোনো প্রেমিকা থাকে
তাতে আমার কিছু যায় আসে না। মোবাইলে টুং করে শব্দ হল। অনেকদিন বাঁচবে মন। মেসেজ খুলে দেখলাম,আজ কেন এলেনা?
যাক একজন তবু যাইনি বলে খবর নিল। পরমুহুর্তে প্রেমিকার কথা ভেবে পটপট টাইপ করি,তুমি কেন মেসেজ করো?মাথার বালিশের কাছে ফোন রেখে গায়ে চাদর টেনে শুয়ে পড়লাম।টুং করে শব্দ হল,আবার কে? মেসেজ খুলে চোখের সামনে ধরলাম,আনন্দ পাই।সেদিন দুটো কথা বলে একটু ছুয়ে কি আনন্দ পেয়েছি তুমি জানোনা।
মোবাইল হাতে ধরে ভাবছি, দুটো কথা বলেই আনন্দ আর কিছু চাই না?আমি আবার টাইপ করি,কথা বলতে ইচ্ছে হলে ফোন করতে
পারো।সেণ্ড বাটন টিপে দিয়ে মনে হল এটা কি ঠিক করলাম? ফোন বেজে উঠল খাল কেটে আমিই কুমীর ডেকে আনলাম। তাড়াতাড়ি ফোন কানে দিয়ে বলি,এত রাতে কি ব্যাপার?
–মণি অনেক রাত অবধি তোমার জন্য বিয়েবাড়ীতে ছিলাম,তুমি এলে না কেন?কোনো সমস্যা?
আমি কথা বলতে পারি না চোখ ঝাপসা হয়ে এল। আবার বলল,মণি চুপ করে থেকো না,কি হয়েছে আমাকে বলো।
–মন আমি ভাল নে-ই।গলা ধরে আসে।
–বুঝেছি তোমাকে আর বলতে হবে না। মণি তুমি কাল তোমাদের বাড়ীর কাছে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ পার্কে এসো,আমি তোমাকে নিজের
চোখে একবার না দেখলে শান্তি পাবো না।
আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি বললাম,ফুচকা খাওয়াতে হবে।
মনের সঙ্গে এইটুকু কথা বলে বেশ হালকা বোধ হচ্ছে।সকাল থেকে বহন করছিলাম একটা দম চাপা কষ্ট,বুকে কফ জমলে যেমন হয় এখন সহজে নিশ্বাস নিতে পারছি। নিজেকে আর একা অসহায় বোধ হচ্ছে না।প্রেমিকার জন্য ব্যঙ্গালোর যাচ্ছে না জিজ্ঞেস করতে হবে কে সেই প্রেমিকা যার জন্য মোটা মাইনের অফার উড়িয়ে দিয়েছে।খালি চ্যাংড়ামি।আচ্ছা যদি
বলে,আছে একজন প্রেমিকা?তাতে কি আমার মন খারাপ হবে? কেন মন খারাপের কি আছে বিয়ে করবে না চিরকাল আমাকে মেসেজ করে যাবে?আমি জিজ্ঞেস করবো,তকে বিয়ে করছে না কেন? চোখ জড়িয়ে আসছে ঘুমে,ডুবে যায় নিবিড় অন্ধকারে।
ঘুম ভাঙ্গল একটু বেলা করে,যেন স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম।কালকের রাতের কথা মনে করার চেষ্টা করি। বিশ্বাস করতে পারিনা
যা যা ঘটেছিল।ফোনে কথা বলেছি কতকাল পরে।আজ দেশবন্ধু পার্কে দেখা করার কথা।শাশুড়ী চা দিতে এলেন।আমি বললাম,আমাকে
ডাকলেই পারতেন।
–তুমি কি এ জগতে ছিলে যে ডাকবো? কি কুম্ভকর্ণ ঘুমরে বাবা। আমি ডাকছি তনিমা ডাকছে ঘুম ভাঙ্গলে তো,অতনু ফোন করেছিল
কতক্ষণ কথা বলল।
–অতনু ফোন করেছিল? কখন?
–এখন এ্যামেরিকায় গভীর রাত্রি।ফোন করেছিল তখন প্রায় পৌনে একটা।
শাশুড়ী এমনভাব করছে যেন এ্যামেরিকার সব কিছু তার নখদর্পণে।
গরবিনী গলায় নির্মলা সুন্দরী বললেন,সবার জন্য গিফট কিনেছে।আর তো মোটে পাঁচটা মাস দেখতে দেখতে কেটে যাবে।আবার কে
ফোন করল?শাশুড়ী ফোন ধরতে গেলেন।
শাশুড়ীর গলার স্বর মুহুর্তে বদলে গেল,আমি আপনাকে ফোন করবো ভাবছিলাম।..বউমার শরীর এমন খারাপ ফেলে যেতেও পারি না
আবার…কি আর করবেন কপালে না থাকলে যা হয়..এখন ভাল আছে..কাল আবার আপনার জামাই ফোন করেছিল…কি আর বলবে দুঃখ করছিল থাকতে পারল না বলে…যাক ভালোয় ভালোয় মিটেছে এই শান্তি..আছা রাখছি?
মনে হচ্ছে আমাদের বাড়ী থেকে ফোন এসেছে। নির্মলাসুন্দরী বেমালুম মিথ্যে বলে গেলেন,গলা একটুও কাপলো না।আমাকে একবার
দিতে পারতেন,দেবেন কেন মিথ্যের জাল যদি ছিড়ে যায়।বাথরুমে গিয়ে ব্রাশ করলাম ঘরে ফিরে দেখি তনিমা বসে আছে।শাশুড়ি
বলছিলেন মেয়েটাকে যেন না জড়াই।বেশি প্রশ্রয় না দেওয়াই ভাল।কোথায় কি করে বসবে দোষ হবে আমার?
তনিমা আমার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলল,বৌদি তোমাকে হেববি দেখতে লাগছে।শিশির সিক্ত ফুলের মত।আয়নার সামনে
দাঁড়িয়ে দেখলাম চুলে জলকণা চিক চিক করছে শিশির সিক্ত সম্ভবত সেই জন্য।
আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম,কোথায় গেছিলে কাল?তোমার মা চিন্তা করছিলেন।
–ছাড়ো তো মার কথা।মার ধারণা আমি বুঝি সজলের সঙ্গে প্রেম করছি।আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি এখানে ছিপ ফেলে লাভ নেই।অন্য পুকুর দেখো।কি বলে জানো?হি-হি-হি ছেলেগুলো এমন ক্যালানে হয় বিরক্তিকর।
আমি উচ্চবাচ্য করিনা।তনিমা বলল,ভয় দেখায় আত্মহত্যা করবে।ওইসব দেবদাসী নাটকে তনিমা চক্কোত্তি ভুলছে না।
মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল,তুমি কি অন্য কাউকে পেয়েছো নাকি?
–এই তো বোউদি তুমিও মায়ের মত বলছো। কাউকে যদি নাও পাই তবু ওই সজল পাগলাকে পাত্তা দেবো ভেবেছো?
কদিন আগে যার চেষ্টা ছিল যেন তাকে কেউ অপমান না করে আজ সে সজল পাগলা? এই পরিবর্তনের পিছনে মনে হয় কিছু কারণ
আছে।বয়স কম হলে বোঝানো যেত কয়েক বছরের ছোট আমার থেকে,বোঝাতে গেলে আমাকেই দু-কথা শুনিয়ে দেবে।বুঝতে পারি
না আজ আমার ঘরে কি মনে করে?
–তোমার মা ফোন করেছিল।পা দোলাতে দোলাতে বলল তনিমা। আগড়ুম বাগড়ুম বলে মা ম্যানেজ করে দিয়েছে। গলার স্বর বদলে
জিজ্ঞেস করে তনিমা,আচ্ছা বৌদি কাল যে তোমার যাওয়া হল না,খারাপ লাগেনি?
–যা খারাপ তা আমি মনে রাখি না।
–কত লোক আত্মীয় স্বজন এসেছিল সবার সঙ্গে দেখা হত–তোমার ছোড়দার সব বন্ধুদের তুমি চেনো?
মনে হচ্ছে তনিমা এবার আসল কথায় আসছে বললাম,কি করে চিনবো? মণিশঙ্করের কম্পিউটার ছিল না তাই ছোড়দার কম্পিউটারে
এ্যাসাইনমেণ্ট ইত্যাদি করতে আমাদের বাড়ীতে আসতো তাই চিনি।
–অ।তনিমা হতাশ হল।বিয়ের দিন যারা তোমাদের বাড়ীতে এসেছিল তুমি তাদের কাউকে চেনো না?
–তুমি যাদের কথা বলছো ওদের কি করে চিনবো? ওরা ছোড়দার অফিস কলিগ।এসব জিজ্ঞেস করছো কেন বলতো?
–কেন জিজ্ঞেস করছি বলবো?তুমি কিছু মনে করবে নাতো?হাসতে হাসতে বলল তনিমা।
মেয়েটাকে যেমন ভেবেছিলাম তা নয় বেশ চালু আছে বললাম,তুমি কেন জিজ্ঞেস করছো বলবে তাতে আমি রাগ করবো কেন?
–ওদের মধ্যে কজন দারুণ স্মার্ট ছেলে ছিল এখন বুঝতে পারছি কেন তোমার সঙ্গে প্রেম হয় নি।
বুঝতে পারলাম কথাটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তনিমা রাণী নিজেকে চালাক ভাবতে চাও ভাবো কিন্তু তোমার বৌদিকে অত বোকা ভেবো না। তনিমার চোখে মুখে দুষ্টু হাসির ঝিলিক,বৌদি একটা সত্যি কথা বলবে?
কি জিজ্ঞেস করবে তনিমা? কাল রাতে শাশুড়ীর সঙ্গে অনেক কথা বলছিল সে সব তথ্য কে ওকে যোগান দিয়েছে জানি না।আমার
সম্পর্কে নতুন কিছু জেনেছে নাকি? মন আগে এক অফিসে ছিল এখন অতনুর অফিসে এসেছে আমিই জানতাম না।ছোড়দা বলেছিল ভাল চাকরি পেয়েছে ঐ অবধি কোথায় কি চাকরি সে সব কিছু বলে নি।আমিও জানতে চাই নি,আর জেনেই বা কি লাভ?
–কি বৌদি ভয় পেয়ে গেলে? তনিমার চোখে এমনভাব যেন কি এক গুপ্ত রহস্য উন্মোচন করেছে।
–তোমাকে একটা কথা বলতে পারি জীবনে এমন কিছু করিনি যার জন্য আমি অনুতপ্ত।
তনিমা আমার কথা কি বুঝল জানি না বলল,তুমি সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছো বৌদি,আমি তা বলিনি।
–তুমি কিছুই বলোনি,আমি বলতে চাই জীবনকে আমি তোমার মত করে দেখি না।
তনিমা গম্ভীর হয়ে যায় বলে,বুঝেছি তুমি বলতে চাইছো সজলকে নিয়ে আমি খেলা করেছি।তুমিও কি জোর দিয়ে বলতে পারো,বিয়ের
আগে তুমি কারো সঙ্গে প্রেম করো নি? কথাগুলো বলে গভীর আগ্রহ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে শোনার জন্য আমি স্বীকার করি
কি না বা অন্য কোনো যুক্তি খাড়া করে বিষয়টা এড়িয়ে যাই।
অনেক কথা বলতে ইচ্ছে হয় কিন্তু সে সব কথা তনিমাকে বলা কতটা সমীচীন দ্বিধা হয়।কেন না কথা বলে একজন কিন্ত যে শোনে নিজের মত অর্থ করে নেয়। কিন্তু ও যেভাবে তাকিয়ে আছে সহজে ছেড়ে দেবে না আমাকে তাই বললাম,শোনো তনিমা ‘প্রেম’ শব্দটা তুমি যে ভাবে
চেনো আমি সেভাবে চিনতাম না।
–মানে? তুমি বলতে চাও প্রেমের বিভিন্ন রকম অর্থ?
আমি হাসলাম এই আশঙ্কাই করেছিলাম বলবো এক বুঝবে আর।তুমি আপেল খাও কামড় দেবার পর বুঝতে পারো আপেলটা খেতে
কেমন কারণ আপেলের স্বাদ সম্পর্কে তোমার একটা ধারণা আছে কিন্তু প্রকৃতির উদ্যানে আপেল দেখে আদম-ইভ যখন আপেলে
কামড় দিল অনুভব করেছিল অনাস্বাদিত আনন্দ,তাদের মধ্যে এনেছিল অভিনব রূপান্তর।
–দারুন বলেছো বৌদি।তনিমা উচ্ছসিত।
–সচেতনভাবে পরিকল্পনা করে ছক কষে কারো সঙ্গে প্রেম করার কথা ভাবিনি।কিন্তু কারো ব্যবহার কারো সাহচর্য কখনো আমাকে
আবেগ তাড়িত করেনি বললে সেটা হবে মিথ্যাচার।সেই আবেগ সেই অনুভুতি আজও আমার অন্তরের মণিকোঠায় সযত্নে রক্ষিত,সম্ভবত যতদিন বাঁচবো থাকবে অমলিন।
–বৌদি তুমি আমার চেয়ে ক-বছরের বড় জানি না কিন্তু ইচ্ছে হচ্ছে তোমার পায়ের ধুলো নিই।
–চ্যাংড়ামো হচ্ছে?
–আর একটা প্রশ্ন প্লিজ বৌদি এটাই শেষ, ধরো যদি সেই প্রেমিক তোমাকে ছেড়ে যদি অন্য কাউকে ভালবাসে এই হারানোর বেদনা
তোমাকে যন্ত্রণা দেবে না?
–হারালাম কোথায়?পুরানো আনন্দানুভুতি তো সম্পদ হয়ে আমার কাছে গচ্ছিত,কেড়ে নেবে সাধ্য কার?
গপ্প করতে করতে অনেক বেলা হয়ে গেল।মনে পড়ল বিকেলে মনের সঙ্গে দেখা হবার কথা। খেয়েদেয়ে ছোটো করে একটা ঘুম দিতে
হবে।বাথরুমে গিয়ে সাবান মেখে শরীরের মালিন্য যতদুর সম্ভব সাফ করলাম।সমস্ত শরীর তন্ন তন্ন করে দেখতে থাকি–উন্নত বক্ষ ক্ষীণ কোটি পুরুষ্ট যোণী উত্তল নিতম্ব। মন বিশ্বাস করো সেদিনের জন্য আমি তোমাকে দায়ী করিনি।সেদিন যা ঘটেছিল তা অনিবার্য,যখন মেলে ধরলাম নিজেকে তুমি যদি উপেক্ষা করতে সে হত আমার চরম অপমান নারীত্ব হত কলঙ্কিত,আমার অঞ্জলিকে সাদরে গ্রহণ করে
আমাকে সম্মানিত করেছিলে বরং সেদিন যদি কিছু না ঘটলেই তা হত আমার পক্ষে মর্যাদাহানিকর।কোনোদিন তোমার দিকে মুখ তুলে তাকাতে পারতাম না।

User avatar
rajkumari
Platinum Member
Posts: 1095
Joined: 22 May 2016 09:23

Re: bengali sex story - যার যেখানে নিয়তি-6

Unread post by rajkumari » 16 Feb 2017 10:17

বিকেল বেলা আমাকে সাজগোজ করতে দেখে তনিমা বলল,বৌদি কোথাও বের হচ্ছো?
হালকাভাবে বললাম,ঘরে বসে বোর হয়ে যাচ্ছি যাই একটু পার্কের দিকে।
–দেশবন্ধু পার্ক?চলো আমিও যাই ভাল্লাগে না ঘরে বসে থাকতে।
আশঙ্কাটা ছিল না তা নয় কিন্তু যদি আপত্তি করি সন্দহ আরো বাড়বে বললা,তোমার বাবা কিন্তু পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়।
–হ্যা হ্যা দেখেছি রিটায়ারড ক্লাব।হেসে বলল তনিমা।
অগত্যা তনিমাকে সঙ্গে নিয়ে হাটতে লাগলাম। ঘড়িতে পাঁচটা কুড়ি।তনিমার মধ্যে কেমন অস্থির ভাব।এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে।পার্কে গেটের
কাছে আসতে তনিমা বলল,বোউদি তুমি ফুচকা অলার কাছে দাঁড়াও আমি একটা জিনিস কিনে আসছি।তনিমা আরজিকর রোডের দিকে
চলে গেল।যাক ভাল হয়েছে এখন মন আসলে হয়।চমকে উঠলাম ফুচকা অলার সামনে দাঁড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসছে মন।জিজ্ঞেস করলাম,কতক্ষণ?
–অনেক্ষণ ঐ গাড়ীর মধ্যে বসে ছিলাম তোমাকে আসতে দেখে এখানে দাঁড়িয়ে আছি।
খুব অস্বস্তি লাগছে যখন মণিদা-মণিদা করতাম তখন এমন হত না।ওর দিকে না তাকিয়ে জিজ্ঞেস করি,বলো কেন আসতে বলেছো?
–তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হল,কতদিন দেখিনি তাই।
–ফুচকা খাওয়াবে না?
মন একটা একশো টাকার নোট ফুচকাঅলাকে দিয়ে বলল,মেমসাবকে ফুচকা দেও।
–বেশি করে ঝাল দেবে।আমি বললাম।
শালপাতার ঠোঙ্গা করে আমাকে দিল মনকে দিতে গেলে বলল,আমি না।
–তুমি খাবে না? আমি একা খাবো?
–তুমি খেলেই আমার তৃপ্তি।
–আহা ঢং।অনেকদিন পর ফুচকা খাচ্ছি ,কলেজের দিনগুলো মনে পড়ছে।ফুচকাওলা তেতুল গোলা জল ভরে ফুচকা ঠোঙ্গায় দিতে
আমি মুখ তুলে হা-করে ফুচকাটা জিভের উপর রেখেছি মন অমনি মুখ থেকে ফুচকাটা টুপ করে তুলে নিজের মুখে পুরে দিল। ফুচকাওলা ফিক করে হাসল।ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে থমকে গেলেও সামলে নিয়ে বললাম,এটা কি হল?
–বলেছিলাম তুমি খেলেই আমার খাওয়া হয় তাই দেখিয়ে দিলাম।
–মুখ থেকে নিলে আমার যদি কোনো রোগ থাকে?
–মণি আমি তোমার সব নিতে চাই।তোমার রোগ শোক ভাল মন্দ আনন্দ বেদনা সব।
চোখে জল চলে এল বললাম,তুমি কি আমাকে কাঁদাতে এসেছো?
–রাতে ফোন করবো।ভাই বাকী পয়সা মেমসাবকে দিয়ে দিও। চলে গেল মন।
তনিমা হাপাতে হাপাতে এসে হাজির,একি বৌদি তুমি শুরু করে দিয়েছো?
–কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো?আমি ভাবলাম তুমি বুঝি আর আসবে না।তুমি কি কিনতে গেছিলে কিনেছো?
–কি কিনবো?
–ঐ যে বললে কি কেনার আছে।
–ও; হ্যা,দোকানটা আজ খোলেনি।বৌদি তুমি কটা খেলে?
–তোমার যে কটা খেতে ইচ্ছে হয় খাও।
–পাঁচটা?
–যা ইচ্ছে।
–ঠিক আছ দশটা?এই দশটা আমাকে দাও।আমার কাছে পয়সা নেই কিন্তু।
ফুচকাওলা দিতে থাকে ,খেতে খেতে তনিমা বলল,এইবার মনে পড়েছে।
আমি হাতের ফুচকা মুখে পুরে তনিমার দিকে তাকাই।তনিমা বলল,জানো বোউদি কোথায় দেখেছি কোথায় দেখেছি কিছুতেই মনে করতে
পারছিলাম না। তোমার ছোড়দার বন্ধু মণিশঙ্কর বাবুকে দেখলাম,রাস্তার ধারে একটা গাড়ীতে উঠল।
–তুমি কথা বললে না কেন?
–দূর থেকে দেখেছি তার আগেই গাড়ী ছেড়ে দিল।
ফুচকাওলা আমাকে চুরানব্বই টাকা ফেরত দিল।আমি বুঝতে পারলাম কৌশল করে মন আমাকে হাত খরচা দিয়ে গেল।
রাতে খেতে বসে কথাটা তুললেন আমার শ্বশুর পশুপতি, বৌমা আজ পার্কে গেছিলে? আমি কিছু বলার আগেই জবাব দিল তনিমা,হ্যা বাবা পার্কে গিয়ে ফুচকা খেলাম,বৌদি খাওয়ালো।পশুপতির মুখে বিরক্তি এ ব্যাপারে মেয়ের কথা বলায় বললেন,তুমি ছিলে?আমার যেন মনে হল একটা ছেলে–তবে কি আমি ভুল দেখলাম?
নির্মলা সুন্দরী বললেন,তোমাকে হাজারদিন ধরে বলছি চোখটা দেখিয়ে চশমার পাওয়ার বদলাও। কে শোনে সে কথা।
–আমার সঙ্গে কমলবাবু ছিলেন উনিই আমাকে দেখালেন–।কথা শেষ না করে পশুপতি নীরবে খেতে থাকেন। নির্মলা সুন্দরী চশমা বদলের কথা বললেও লক্ষ্য করলাম ওর সন্দিহান দৃষ্টি আমার দিকে।
ওরাই আলোচনা সেরে ফেলল আমাকে কিছু বলতে হলনা।বুঝতে পারলাম পশুপতি মনকে দেখেছেন।আমার মুখ থেকে ফুচকা তুলে নেওয়া দেখেন নি তো?খাওয়া শেষ করে হাত মুখ ধুয়ে নিজের ঘরে চলে
এলাম,দরজা বন্ধ না করে ভেজিয়ে রাখলাম।আমার মনে হল পশুপতির দম শেষ হয়নি আমি উঠলেই আবার শুরু করবেন,কান খাড়া রাখলাম।

Post Reply